ইরানের সর্বশেষ রাজতন্ত্রের উত্তরাধিকারী রেজা পাহলাভি স্থানীয় সময় সোমবার (২৩ জুন) পশ্চিমা দেশগুলোকে আহ্বান জানিয়েছেন, ইরানে স্থায়ী শান্তি ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা আনতে বর্তমান শাসনব্যবস্থার পতন অপরিহার্য।
এর ঠিক দু’দিন আগে, শনিবার (২১ জুন) ইরানের পরমাণু স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্র বোমা হামলা চালায়। ওয়াশিংটন সেসময় জানায়, তাদের লক্ষ্য ইরানের পরমাণু অস্ত্র উন্নয়ন রোধ করা, কোনো শাসন পরিবর্তন নয়। তবে হামলার পরদিনই রোববার (২২ জুন) এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের ধর্মীয় শাসকদের উৎখাতের ইঙ্গিত দেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে প্যারিসে এক সংবাদ সম্মেলনে রেজা পাহলাভি বলেন, “এখনই ইরানি জনতার পাশে দাঁড়ানোর মুহূর্ত। অতীতের ভুল পুনরাবৃত্তি করবেন না। এই শাসনব্যবস্থাকে আর কোনো প্রাণরক্ষাকারী সাহায্য দেবেন না। কেবল পরমাণু স্থাপনা ধ্বংস করেই শান্তি আসবে না।”
তিনি আরও বলেন, “পরমাণু অস্ত্র রোধ ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিয়ে সবার উদ্বেগ যথার্থ। তবে এই লক্ষ্যগুলো অর্জন ও স্থায়ী করতে হলে ইরানে একটি গণতান্ত্রিক পরিবর্তনই একমাত্র উপায়।”
পাহলাভির বক্তব্যের বিষয়ে ইরানি কর্তৃপক্ষ এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবে মার্কিন-সমর্থিত শাহের পতনের পর রেজা পাহলাভি নির্বাসনে আছেন। ইরানে তার সমর্থনের মাত্রা স্পষ্ট নয়। কেউ কেউ এখনও শাহ আমলের দমন-পীড়ন ও ‘সাভাক’ গোয়েন্দা পুলিশের স্মৃতি মনে রাখে, তবে বিক্ষোভে মাঝে মাঝে রাজতন্ত্রপন্থী স্লোগানও শোনা গেছে।
এদিকে, প্রমাণ ছাড়াই পাহলাভি দাবি করেন, ইরানি শাসনব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে এবং আলী খামেনি ও শীর্ষ নেতারা দেশ ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
তিনি বলেন, “এটি ইরানি জনগণের জন্য বার্লিন প্রাচীর মুহূর্ত। তবে সব বড় পরিবর্তনের মতোই, এতে বিপদের সম্ভাবনা রয়েছে।”
যখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হয় তিনি কি ভবিষ্যতের কোনো নেতৃত্ব চান, তিনি বলেন, তিনি রাজনৈতিক ক্ষমতা চান না। তার মতে, ইরানের পরিবর্তন হতে হবে ভৌগোলিক অখণ্ডতা, ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, সমতা ও ধর্ম-রাষ্ট্র পৃথকীকরণের ভিত্তিতে।